প্রিন্ট এর তারিখঃ May 18, 2025 ইং || প্রকাশের তারিখঃ May 12, 2025 ইং
লোহাগড়ায় পূর্ব শত্রুতার জের ধরে হত্যা, স্বল্প সময়ের মধ্যে আসামি গ্রেফতার।
মনির
খান স্টাফ রিপোর্টার:
নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার শামুকখোলা গ্রামে পূর্ব শত্রুতাকে কেন্দ্র করে
আসামীদের সাথে মামলার ভিকটিম মৃত মোঃ সালমান খন্দকারের পরিবারের অন্যান্য
সদস্যদের দীর্ঘদিন ধরে গ্রাম্য ও সামাজিক দলাদলি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। এরই
ধারাবাহিকতায় গত ০৮/০৫/২০২৫ তারিখ মোঃ সালমান খন্দকার নামের ব্যক্তিকে
এলোপাথাড়ি কুপিয়ে হত্যার করে। ইতিপূর্বে এলাকায় উল্লিখিত আসামীদের
বিরুদ্ধে নাশকতা মামলা হয়। নাশকতা মামলায় আসামী শ্রেনীভুক্ত হওয়ায় তাদের
প্রতি ক্ষিপ্ত হইয়া থাকে।
গত ০৮-০৫-২০২৫ ইং তারিখ রোজ বৃহস্পতিবার আনুমানিক
রাত ১০.০০ ঘটিকার সময় গ্রেফতারকৃত আসামীসহ এজাহারনামীয় আসামীগণ ৪নং
নোয়াগ্রাম ইউনিয়নের আড়পাড়া সাবেক চেয়ারম্যান কালুর ইট ভাটায় ভিকটিম সালমান
খন্দকারকে হত্যা করিবার জন্য পরিকল্পনা করে। গত ০৮-০৫-২০২৫ ইং তারিখ রোজ
বৃহস্পতিবার আনুমানিক রাত ১০.৩০ মিনিটের সময় আসামী ফরিদ আলী, সন্তু কাজী,
কালাম কাজী, আলিম কাজী, অছি কাজীগণ বাদীর বাড়ীতে আসিয়া বাদীর ভাই ভিকটিম
সালমানকে বলে, "বালি বেচা-কেনা নিয়ে জরুরী কথা আছে- কালুর ইট ভাটায় একটা
জরুরী মিটিং আছে।" তখন ভিকটিম সালমান খন্দকার সরল বিশ্বাসে ব্যবসায়িক কাজের
বিষয়ে আলোচনার জন্য আসামীদের সাথে ভিকটিম সালমান খন্দকার এর সাথে থাকা
কাজী মশিয়ার রহমান পিন্টুর মোটর সাইকেল যোগে যায়। সেখানে যাওয়ার পর ২ ঘন্টা
অতিবাহিত হইবার পর বাদী তার ভাই ভিকটিম সালমান এর মোবাইলে ফোন দিলে রিসিভ
করে না। তখন তাদের সন্দেহ হয় এবং বাদী উল্লিখিত আসামীদের বাড়ীতে ঐ রাতে
গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করিলে আসামীদের বাড়ীতে পায় না এবং তাহাদের ফোন বন্ধ বলিয়া
তাহাদের বাড়ীর মহিলারা জানায়। বাদী তার চাচা রিপন খন্দকার, মুকুল খন্দকার,
মনির খন্দকারদের লইয়া কালুর ইট ভাটা সহ বিভিন্ন জায়গায় ভিকটিম সালমানকে
খোঁজাখুজি করিয়া কোথাও পায় না। পরবর্তীতে গত ০৯-০৫-২০২৫ ইং তারিখ রোজ
শুক্রবার সকাল ০৮.৩০ ঘটিকার সময় বাদী লোক মারফত জানতে পারে তার ভাইয়ের লাশ
রক্তাক্ত জখম অবস্থায় আড়পাড়া কালুর ইটের ভাটার দক্ষিণে সৈয়দ ওমর আলীর জমিতে
পড়িয়া আছে। তখন বাদীসহ তার পরিবারের লোকজন লাশের খবর পাইয়া দৌড়াইয়া আড়পাড়া
৫৬ নং কাওলিডাঙ্গা মৌজায় সৈয়দ ওমর আলীর জমিতে আমার ভাইয়ের লাশ দেখিতে
পায়। বেলায়েত খন্দকার, পিং- মৃত সবুজ খন্দকার জানায় তার পুত্র আব্দুল্লাহ
খন্দকার সহ মোটর সাইকেল যোগে গত ০৮-০৫-২০২৫ ইং তারিখে দিবাগত রাত আনুমানিক
১১.০০ ঘটিকার সময় শুলটিয়া গ্রাম হইতে নিজের বাড়ীতে কালুর ইটের ভাটার
পার্শ্ব দিয়া আসার সময় মটর সাইকেলের আলোতে দেখিতে পায় গ্রেফতারকৃত আসামী
মোঃ মশিয়ার মোল্যাসহ এজাহারনামীয় আসামীরা ও অন্যান্য অজ্ঞাতনামা আসামীরা
দেশীয় মারাত্মক অস্ত্রাদি সহ বৈঠক করছে। তখন বেলায়েত খন্দকার কোন কিছু
জিজ্ঞাসা করিবার পূর্বে আসামীরা বলে "আজ যা দেখিলি তা প্রকাশ করিলে খুন
হইয়া জাবী।" তিনি প্রাণ ভয়ে রাতে উক্ত কথা কউকে ভয়ে বলিতে পারি নাই মর্মে
জানায়। গ্রেফতারকৃত আসামীকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে উক্ত মামলার ঘটনায় জড়িত
থাকার কথা স্বীকার করে। এ ঘটনায় নিহতের ভাই বাদী হয়ে লোহাগড়া থানায়
এজাহার দায়ের করলে মামলা রুজু হয়। মামলা রুজুর সাথে সাথে নড়াইল জেলা
পুলিশ সুপার কাজী এহসানুল কবীরের নির্দেশনায় অত্র এলাকায় পুলিশের টহল
জোরদার করা হয় এবং হত্যাকাণ্ডে জড়িত আসামিদের গ্রেফতারের জন্য তৎপর হয়
পুলিশ। লোহাগড়া থানার এসআই(নিঃ) তারক বিশ্বাস সঙ্গীয় ফোর্সসহ অভিযান চালিয়ে
গত ১১ মে (রবিবার) অত্র মামলার এজাহার নামীয় ১৭ নং আসামী মসিয়ার মোল্যা
(৪০), পিতা-মান্নান মোল্যা, শামুকখোলা, থানা-লোহাগড়া, জেলা-নড়াইলকে নিজ
বাড়ি হতে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
নড়াইল জেলার পুলিশ সুপার সময়োপযোগী ও সাহসী পদক্ষেপে অত্র এলাকার বর্তমান
আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। আসামিদের বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ
করা হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেফতার করতে জেলা পুলিশের একাধিক টিম কাজ
করছে।
© সকল কিছুর স্বত্বাধিকারঃ জার্নাল বাংলাদেশ