পাকিস্তান কোনো হিংসাত্মক দেশ নয়, বরং শান্তিকেই সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়। এমনটাই জানিয়েছেন দেশটির আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী।
রোববার (১৮ মে) পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ডন- এ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে আসে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গত মাসে ভারতের কাশ্মীরের পেহেলগামে ভয়াবহ এক হামলার ঘটনায় কোনো ধরনের প্রমাণ ছাড়াই ইসলামাবাদকে অভিযুক্ত করে নয়াদিল্লি। তবে পাকিস্তান সরকার এই অভিযোগ দৃঢ়ভাবে অস্বীকার করে এবং ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানায়।
পাল্টাপাল্টি কূটনৈতিক অবস্থানের মধ্যে উত্তেজনা বাড়তে থাকলে ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ নেয়। এর জবাবে পাকিস্তানও পাল্টা প্রতিক্রিয়া জানায়, যার ফলে দুই পারমাণবিক শক্তিধর দেশের মধ্যে সরাসরি সামরিক সংঘর্ষ শুরু হয়।
চার দিন ধরে চলা এই সংঘর্ষের অবসান ঘটে ১০ মে, যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায়। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আকস্মিকভাবে ঘোষণা দেন, ভারত ও পাকিস্তানের নেতৃত্বের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ধারাবাহিক কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে দুই দেশ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে।
এ বিষয়ে পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন পিটিভি নিউজ জানায়, ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধবিরতি প্রসঙ্গে আরটি আরবি-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী বলেন, আমরা ঔদ্ধত্য জাতি নই, আমরা একটি ‘সিরিয়াস’ জাতি। আমাদের প্রথম অগ্রাধিকার হলো শান্তি।
তিনি আরও বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো বৃহৎ ও বিচক্ষণ দেশ পাকিস্তানের জনগণের মনোভাব কী তা ভালোভাবেই বোঝে।
ভারতের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করতে যারা কাজ করেছেন, তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে আইএসপিআরের প্রধান বলেন, আমাদের কূটনীতিকরা অসাধারণ কাজ করেছেন। তারা অত্যন্ত প্রজ্ঞার সঙ্গে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সম্পৃক্ত করেছেন।
তবে সংঘর্ষের সময় ভারতের মারাত্মক হামলার প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তান যে কঠোর জবাব দিয়েছে, তাও উল্লেখ করেন তিনি। আইএসপিআরের ডিজি বলেন, ৬-৭ মে রাতে নয়াদিল্লির মারাত্মক হামলার পরপরই পাকিস্তান দৃঢ় ও তাৎক্ষণিক জবাব দেয়। ৫টি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করা হয়। আমরা অত্যন্ত পরিপক্বতার সঙ্গে কার্যকর পদক্ষেপ নিয়ে শত্রুকে বাস্তবতার মুখোমুখি হতে বাধ্য করেছি।
লেফটেন্যান্ট জেনারেল চৌধুরীর এ বক্তব্য স্পষ্টভাবে তুলে ধরে, পাকিস্তান হিংসার নয়, বরং শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের পক্ষেই অবস্থান নিচ্ছে।