প্রিন্ট এর তারিখঃ Oct 1, 2025 ইং || প্রকাশের তারিখঃ May 21, 2025 ইং
লোহাগড়ায় আবারও বিএনপি নেতাকর্মী, হত্যা মামলার আসামি ও হিন্দুদের বাড়ি ভাঙচুর, লুটপাট ও হুমকি প্রদান

মনির
খান স্টাফ রিপোর্টার: নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার ইতনা ইউনিয়নের কুমারডাঙ্গা গ্রামে খাজা মোল্যা
(৪২) হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বিএনপি নেতাকর্মী, আসামি পক্ষের লোকজন ও হিন্দু
সম্প্রদায়ের বাড়িতে আবারও হামলা, ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ ও ব্যাপক লুটপাটের
অভিযোগ উঠেছে বাদীপক্ষের বিরুদ্ধে।
গতরাতে (মঙ্গলবার, ২০ মে, ২০২৫) শেখ শহীদ আলী, শেখ শাহীন আলী ও মিলন মোল্লা
(সভাপতি, ইতনা ইউনিয়ন কৃষক দল) ও হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়ীতে লুটপাট,
ভাংচুর ও ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়। মারপিট করে এলাকা ছাড়া করা হয়েছে বৃদ্ধ গোলক
বিশ্বাস ও তার ভাই বাবুরাম বিশ্বাসকে।
একই সময়ে কুমারডাঙ্গা গ্রামের লিটন শেখের স্ত্রী মোসা: মৌ আক্তারকে
শারীরিকভাবে অপমান অপদস্ত করে মারপিট করা হয়েছে। তিনি লোহাগড়া উপজেলা
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তিনি বলেন, তাকে মারধর
করার পর তিনি দৌড়ে পালিয়ে গেলে তার বাড়ীতে লুটপাট চালানো হয়।
লুটপাটের ঘটনায় ফারজানা রইজ বাদী হয়ে লোহাগড়া থানায় ৭২ জনের বিরুদ্ধে
লুটপাট ভাংচুর ও অগ্নি সংযোগের ঘটনা উল্লেখপূর্বক একটি মামলা দায়ের করেন।
উক্ত মামলার আসামি (২১ মে বুধবার) মাস্টার আবুল বাশার (কুমারডাঙ্গা) ও
আব্দুর রহমান (ইতনা) কে পুলিশ গ্রেফতার করে জেল হাজতে পাঠায়।
ইতনা ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি তানভীর মোল্লা তিনি,কুমারডাঙ্গা গ্রামের শেখ
ইনসান আলী মেয়ে ডলি পারভীনকে বলেন, বেশি বাড়াবাড়ি করলে তোর বাপচাচাদের
সব বাড়ি ভেঙ্গে মাটির সাথে মিশিয়ে দিব, পুড়িয়ে ছাই করে দেব। থানার দিকে
আর আসবি না মর্মে হুমকি ধামকি দিয়ে শাসিয়েছে বলে অভিযোগ ডলি পারভীনের। উল্লেখ্য গত ১৪ মে সকাল সাড়ে ৬টার দিকে কুমারডাঙ্গা বাজারে একটি চায়ের
দোকানের সামনে দুর্বৃত্তদের ধারালো অস্ত্রের কোপে খুন হন খাজা মোল্যা।
গত এক সপ্তাহ ধরে আসামি পক্ষের প্রায় ৩০/৪০টি বাড়িতে দফায় দফায় হামলা,
লুটপাট ও ভাংচুর সহ অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটছে।
এলাকার আবালবৃদ্ধবনিতা ঘরবাড়ি
ছাড়া হয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্ত শেখ আইয়ুব আলী (সভাপতি, লোহাগড়া উপজেলা মৎসজীবী দল) তার স্ত্রী
ফারজানা ববি জানান, সিহানুক চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগের লোক। আমরা বিএনপি
করি। খাজা মোল্লা নিহত হলে ওরা উদ্দেশ্যমূলক ভাবে আমাদের পরিবার ও দলের
লোকদের হত্যা মামলার আসামী করে আমাদের বাড়ীঘর লুটপাট করে পুড়িয়ে দিয়েছে।
এবং প্রতি রাতে পোড়াচ্ছে।
শেখ পলাশ আলীর (সভাপতি, ইতনা ইউনিয়ন বিএনপি) তিনার স্ত্রী সাবিনা ইসলাম
বন্যা জানান, বিএনপির রাজনীতি করায় আমাদের পরিবারের উপর এ অত্যাচার শুরু
হয়েছে।
সিহানুক চেয়ারম্যান ও তার দলের লোক কয়েকদিন আগে কুমারডাঙ্গা হাটের
উপর বিএনপির অফিস ভাংচুর করেছে। আমার স্বামী এজন্য ওদের বিরুদ্ধে মামলা
করেছিল। আওয়ামী লীগের লোকজন খাজা হত্যার পরে
আমাদের বিরুদ্ধে হামলা, মামলা করে আমাদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নিচ্ছে,
লুটপাট, ভাংচুর ও অগ্নি সংযোগ করছে। সিহানুক চেয়ারম্যানের সাথে যোগ দিয়েছে
ইতনা ইউনিয়ন যুবদল সভাপতি তানভির মোল্লা।
খাজা হত্যা মামলার বাদী আলী হায়দার মোল্যার সাথে যোগাযোগ করে তাকে পাওয়া
যায় নাই।
হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা লোহাগড়া থানার উপ-পরিদর্শক মো. আজিজুর
তালুকদার জানান, হত্যা মামলাটির তদন্ত চলছে।
মামলায় জড়িত আসামিদের
গ্রেপ্তারে জোর চেষ্টা চলছে। কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঠেকাতে পুলিশ তৎপর
রয়েছে। এখানকার আইনশৃংখলা রক্ষায় পুলিশ কঠোর অবস্থানে রয়েছে।
© সকল কিছুর স্বত্বাধিকারঃ জার্নাল বাংলাদেশ