প্রিন্ট এর তারিখঃ Oct 2, 2025 ইং || প্রকাশের তারিখঃ Jul 14, 2025 ইং
লোহাগড়ায় সৎ ভাই- দৃষ্টি প্রতিবন্ধীর জমি বিক্রি করে টাকা আত্মসের অভিযোগ
মনির
খান স্টাফ রিপোর্টার:
নড়াইলের লোহাগড়া পৌর শহরের লক্ষীপাশা গ্রামে এক দৃষ্টি ও বুদ্ধি
প্রতিবন্ধী ব্যক্তির জমি প্রতারণার মাধ্যমে বিক্রি করে প্রায় ১২ লাখ ৫০
হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে মৃত জাকির শেখের সৎ ভাই সাজাহান কুটির
বিরুদ্ধে।
ভুক্তভোগী মোসাঃ আমেনা পারভীন জানান, তার পিতা মৃত, জাকির শেখ জীবদ্দশায়
লক্ষীপাশা মৌজার এসএ খতিয়ানভুক্ত একটি জমির একমাত্র মালিক ছিলেন। তিনি
দৃষ্টি ও বুদ্ধি প্রতিবন্ধী হওয়ায় স্বাক্ষর করতে না পারলেও প্রতারক
সাজাহান কুটি মিথ্যা প্রতিশ্রুতি ও জালিয়াতির মাধ্যমে তার টিপসহি নিয়ে
মোট জমি থেকে ১,৮৩ শতক জমি প্রায় ১২ লাখ ৫০ হাজার টাকা বিক্রি করে ঐ টাকা
আত্মসাৎ করেছেন।
ঘটনাটি ঘটে ২০২৪ সালের ৭ ডিসেম্বর।
অভিযোগে বলা হয়, সাজাহান কুটি আমেনা
পারভীনের পিতা মৃত্যু জাকির শেখের নাম ও টিপসহি ব্যবহার করে শিকদার মিজানুর
রহমানের কাছে ১ শতক ৮৩ পয়েন্ট জমি ১২ লাখ ৫০ হাজার টাকায় বিক্রি করেন।
সেই টাকা ব্যাংকে জমা রেখে প্রতি মাসে এতিম নাবালক ছেলে আল আমিন ও মেয়ে
আমেনা পারভীন কে ২০ হাজার টাকা করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন ,আমেনার
পারভীনের সৎ চাচা শাজাহান কুটি। কিন্তু অদ্যবধি পর্যন্ত তাদের কে কোনো
প্রকার টাকা পয়সা দেয়া হয়নি।
এ ছাড়াও ইতিপূর্বে মৃত্যু জাকির শেখের বসতভিটার উপর কয়েকশো বছর আগের
নির্মিত একটি বিল্ডিং যা আগেরকার আমলের চুন সুরকি ও লোহার ভীমে তৈরি ২০ ফিট
প্রতিটি রুমের দৈর্ঘ্য প্রস্থ সহ ৬ টি রুম বিশিষ্ট বিল্ডিংটি ভেঙ্গে
সরিয়ে নেয়।
জমি বিক্রি হচ্ছে, কিন্তু দৃষ্টি প্রতিবন্ধী জাকির শেখের ২ টি ছেলে মেয়ে
কেহ ই জানেন না। যখন জানতে পারে তখন শাজাহান কুটি ঐ ২ টি ছেলে মেয়ের হাতে
১০০ টাকার তিনটি স্ট্যাম্প (নং: গক ২৪৮৮০৫১, গক ২৪৮৮০৫০, গক ২৪৮৮০৪৯) তুলে
দেয়।
সেগুলোর আইনি বৈধতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
ভুক্তভোগী আমেনা পারভীন বলেন, সাজাহান কুটি এখন আমার ছোট ভাই আলামিনকে
এলাকাছাড়া করে রেখেছেন যাতে আমরা ন্যায্য দাবি আদায় করতে না পারি।
তবে অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে অভিযুক্ত সাজাহান কুটি বলেন, “আমার
বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে সত্য ,আমার কাছে ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা ছিল ঠিকই,
কিন্তু আমি পরে আল আমিন কে কিছু টাকা দিয়েছি। তিনটি ১০০ টাকার স্ট্যাম্প
সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন,একটি ১০০ টাকার স্ট্যাম্প দিয়েছি। অথচ
তিনি উল্লেখিত ১০০ টাকার তিনটি স্ট্যাম্প দিয়েছে। প্রতিশ্রুতি ছিল ব্যাংকে
টাকা গুলো রেখে প্রতি মাসে ভুক্তভোগীদের ২০,০০০ টাকা দিবে। কিন্তু অদ্যবধি
পর্যন্ত শাজাহান কুটি ভুক্তভোগীদের কোন প্রকার টাকা পয়সা দেন নাই।
এদিকে ভুক্তভোগী পরিবার লোহাগড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও
লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়ে দোষীদের
বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
অভিযোগে আরো উল্লেখ করা হয়, এই শাহজাহান কুটি শুধু নিজের পরিবার নয়,
ইতোপূর্ব থেকে এলাকার সরকারি জমিসহ বিভিন্ন জায়গা জমি নিয়ে জাল জালিয়াতি
করে নিজের নামে ও বেনামে করে নিয়েছেন।
এ বিষয়ে লোহাগড়া থানার (ওসি) জানান, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত করে
আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
© সকল কিছুর স্বত্বাধিকারঃ জার্নাল বাংলাদেশ