কাঠমান্ডু পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নেপালের ইতিহাসে এটিকে এক
যুগান্তকারী রায় হিসেবে দেখা হচ্ছে।
কারণ এত বড় পরিমাণ ক্ষতিপূরণ আগে কখনো
নির্ধারিত হয়নি এবং উড়োজাহাজ বিধ্বস্তের ঘটনায় এর আগে কোনো এয়ারলাইন
কর্তৃপক্ষকেও দায়ী বলে চূড়ান্ত রায় দেওয়া হয়নি। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ইউএস-বাংলা এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল
করার অধিকার রাখে। এই রায়ের ফলে ভবিষ্যতে ইচ্ছাকৃত অবহেলা বা গুরুতর
দায়িত্বজ্ঞানহীনতার প্রমাণ পাওয়া গেলে যাত্রী বা তাঁদের পরিবার আদালতের
শরণাপন্ন হয়ে ক্ষতিপূরণ দাবি করতে পারবেন বলে মনে করা হচ্ছে।
মামলাটি দায়ের করেছিলেন ১৬ জন নিহত যাত্রীর পরিবার ও একজন আহত যাত্রী।
ক্ষতিপূরণ পাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন নেপালের একাধিক এমবিবিএস
শিক্ষার্থী, এক নার্স, এক পাইলট ও অন্য পেশাজীবীরা। সর্বোচ্চ ক্ষতিপূরণ
নির্ধারিত হয়েছে একজন নিউরোসার্জনের ক্ষেত্রে, যা ২ লাখ ৭৭ হাজার ৫৪৮
ডলার।
২০১৮ সালের ১২ মার্চ ইউএস-বাংলার একটি বোম্বারডিয়ার ড্যাশ–৮
উড়োজাহাজ ত্রিভুবন বিমানবন্দরে অবতরণের সময় রানওয়ে থেকে সরে গিয়ে আগুন ধরে
যায়। নিহতদের মধ্যে ২২ জন নেপালি, ২৮ জন বাংলাদেশি এবং একজন চীনা নাগরিক
ছিলেন। এটি ছিল বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ উড়োজাহাজ দুর্ঘটনা।
কাঠমান্ডু পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রায়ে উড়োজাহাজ চালনায় অবহেলা,
পাইলটের মানসিক অবস্থা এবং নিরাপত্তাজনিত ব্যর্থতাকে ওই দুর্ঘটনার মূল কারণ
হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। রায়টি ১৯২৯ সালের ওয়ারস ক্লনভেনশন ও ১৯৫৫ সালের
হেগ প্রটোকলের ভিত্তিতে দেওয়া হয়েছে।
এদিকে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনসের
জনসংযোগ বিভাগের মহাব্যবস্থাপক মো. কামরুল ইসলাম এক প্রাতিষ্ঠানিক
বিবৃতিতে বলেছেন, সম্প্রতি নেপালের কোনো আদালতে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের
বিরূদ্ধে কোনো ধরনের রায় প্রদান করে নাই। কাঠমান্ডু পোস্টের এ ধরনের
প্রতিবেদন সম্পূর্ণ মিথ্যা ও কল্পনাপ্রসূত।
মো. কামরুল ইসলাম
তাঁর বক্তব্যে এও উল্লেখ করেছেন যে, ‘অসত্য তথ্যের উপর ভিত্তি করে, অন্য
একটি দেশের একটি জাতীয় দৈনিকের প্রতিবেদনের উপর ভিত্তি করে বাংলাদেশের কোনো
সংবাদমাধ্যম আদালতের কোনো অনুলিপি ব্যতীত কোনো সংবাদ পরিবেশন করা সমুচীন
হবে না বলে ইউএস-বাংলা কর্তৃপক্ষ মনে করে।’
দ্য কাঠমান্ডু পোস্ট
নেপালের একটি বহুল প্রচারিত ইংরেজি দৈনিক। ১৯৯৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে দেশটির
প্রথম ব্যক্তিমালিকানাধীন ইংরেজি দৈনিক হিসেবে যাত্রা শুরু করে দ্য
কাঠমান্ডু পোস্ট। পাঠকপ্রিয়তায় পুরো নেপালে দ্য কাঠমান্ডু পোস্ট দ্বিতীয়
স্থানে আছে বলে দাবি করে থাকে সংবাদমাধ্যমটি।