২০২৪ সালের প্রথম ছয় মাসে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালিতে পৌঁছেছেন ৯ হাজার ৭৩৫ বাংলাদেশি, যা জাতিসংঘের উদ্বাস্তু বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর-এর তথ্য অনুযায়ী এ রুটে বিশ্বে সর্বোচ্চ। একই সময়ে ইরিত্রিয়া, মিসর, পাকিস্তান ও ইথিওপিয়া থেকে এসেছে যথাক্রমে চার হাজার ৩৪৮, তিন হাজার ৫৫৬, দুই হাজার ৬২৫ জন ও এক হাজার ৪৩০ জন।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, দেশে মানব পাচারবিরোধী আইনে ঝুলে আছে চার হাজার ৩৬০টি মামলা, যার মধ্যে তিন হাজার ১৪টি বিচারাধীন।
বুধবার (৩০ জুলাই) আন্তর্জাতিক মানব পাচারবিরোধী দিবস। এবারের প্রতিপাদ্য— ‘সংঘবদ্ধ অপরাধ মানব পাচার, বন্ধ হোক শোষণের অনাচার’।ফ্রন্টেক্স জানায়, ২০০৯ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত সেন্ট্রাল মেডিটেরিনিয়ান রুটে ৯২ হাজার ৪২৭ বাংলাদেশি ইউরোপে প্রবেশ করেছে। জানুয়ারিতে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিতে গিয়ে প্রাণ হারান ২৩ জন বাংলাদেশি।
ব্র্যাকের এক জরিপে দেখা যায়, ৬০ শতাংশ অভিবাসী ভালো কর্মসংস্থানের আশায় লিবিয়ায় যান, কিন্তু ৮৯ শতাংশই কোনো কাজ পান না। ৭৯% নির্যাতনের শিকার হন, ২২% দিনে একবার খাওয়ার সুযোগ পান। দালালচক্র এখন হজ, ভিজিট বা কনফারেন্স ভিসা দেখিয়ে মানুষ পাচার করছে। নতুন গন্তব্য হিসেবে যুক্ত হয়েছে দুবাই, মালয়েশিয়া, সৌদি আরব, নেপাল, তিউনিসিয়া, রাশিয়া, কম্বোডিয়াসহ একাধিক দেশ। নারীদের পারলার বা রেস্টুরেন্টে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে যৌন পেশায় বাধ্য করার ঘটনাও ঘটেছে। এমন পাচারের শিকার হয়ে ২০২৩ সালে ছয় নারীকে উদ্ধার করে আইজেএম।
এ ছাড়া মিয়ানমারে স্ক্যাম সেন্টারে বাংলাদেশিদের সাইবার অপরাধে বাধ্য করা হয়েছে, যেখান থেকে ব্র্যাক উদ্ধার করেছে ১৮ জনকে। পাচারকারীরা এখন সহজ অন-অ্যারাইভাল ভিসার সুযোগ নিয়ে বাংলাদেশিদের নেপালেও পাচার করছে। ২০১২-২০১৫ সালে রোহিঙ্গাদের ব্যাপক পাচারের পর আবারও বিয়ে ও চাকরির ফাঁদে ফেলে রোহিঙ্গা পাচার ব্যাপকতা পেয়েছে।