দীর্ঘ ছয় বছরের অচলায়তন ভেঙে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ফের ফিরে এসেছে
ডাকসু নির্বাচনের আবহ। আগামী ৯ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে এই
নির্বাচন। অংশগ্রহণে আগ্রহী অন্তত পাঁচটি প্যানেলের মধ্যে রয়েছে ছাত্রদল,
ছাত্রশিবির, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ, প্রগতিশীল ছাত্র জোট, ছাত্র
অধিকার পরিষদ ও নির্দলীয় শিক্ষার্থীদের একটি ফোরাম।
২০১৯ সালে ২৯ বছর পর ডাকসু নির্বাচন ফিরলেও সে আশায় জল ঢেলে দেয় নির্বাচনের দিনই। প্রক্রিয়ায় একচেটিয়া ক্ষমতার ছাপ এবং অংশগ্রহণে বৈষম্যের অভিযোগ তখন বিতর্ক ডেকে আনে। এবারের নির্বাচন ঘিরে তাই স্বচ্ছতা ও প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশ চায় শিক্ষার্থীরা।
২০২৫ সালের ৫ আগস্টের পর ক্যাম্পাসে ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনসহ বিভিন্ন অংশের জোরালো দাবির মুখে ঘোষণা করা হয়েছে ডাকসু নির্বাচনের তারিখ। আগামী ৯ সেপ্টেম্বরের এই নির্বাচন হতে যাচ্ছে।
সম্প্রতি জুলাইয়ে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে গঠিত ‘বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ’-এর আহ্বায়ক আবু বাকের মজুমদার বলেন, “এটি একটি ইতিবাচক ও প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন হতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উচিত সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করা।”
ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক আবিদুল ইসলাম খান বলেন, “এই নির্বাচন আমাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ। তবে আমরা সংস্কার প্রস্তাব দিয়েও প্রশাসনের কাছ থেকে কাঙ্ক্ষিত সাড়া পাইনি।”
অন্যদিকে ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি আবু সাদিক কায়েম মনে করেন, “এই নির্বাচন শুধু ক্যাম্পাস নয়, আগামীর বাংলাদেশ গঠনের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। তবে কমিশনে সাদাদল ঘনিষ্ঠ সদস্যদের আধিক্য আমাদের শঙ্কিত করছে।”
ঢাবি সাংবাদিক সমিতির সভাপতি মহিউদ্দিন মুজাহিদ মাহি বলেন, “রাজনৈতিক পরিচয়ের বাইরে গিয়ে ইলেকশন হলে, শিক্ষার্থীদের জন্য কাজ করাটা অনেক সহজ হবে।”
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক মুখপাত্র উমামা ফাতেমার মতে, “আমাদের মূল পছন্দ থাকবে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়েই নির্বাচন আয়োজন করা।”
তবে নির্বাচনের গঠনতন্ত্র ও কমিশন নিয়েও রয়েছে মতবিরোধ। অংশগ্রহণকারী কয়েকটি পক্ষ দাবি তুলেছে—নির্বাচনী প্রক্রিয়া যেন দলীয় প্রভাবমুক্ত ও স্বচ্ছ হয়।
আবু সাদিক কায়েম বলেন, নির্বাচন কমিশনে যারা আছেন তাদের মধ্যে সাদা দলের রিপ্রেজেন্টেটিভ সবচেয়ে বেশি। তাই আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনকে অনুরোধ করবো ডাকসুর নির্বাচনের যে প্রক্রিয়া সে অনুযায়ী যেন সবকিছু সম্পন্ন হয়। কোন একটি দলের প্রতি তাদের বিশেষ সাপোর্ট যেন না থাকে।
আর ছাত্রদলের আবিদুল ইসলাম খান বলেন, আমরা বহু সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছি। সেই জায়গা থেকে আমরা বারবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের সঙ্গে বসেছি কিন্তু অনুভব করেছি তারা আমাদের কথাকে কোন প্রকার দাম দিচ্ছে না।
সাধারণ শিক্ষার্থীদের চাওয়া ডাকসু নির্বাচনে যেন নির্বিঘ্নে বেছে নেয়া যায় পছন্দের প্রতিনিধিদের। যেখানে থাকবে না দখলী মানসিকতা আর পেশীশক্তির ব্যবহার।