আইনি ভিত্তি না দিলে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) জুলাই সনদে সই করবে না
বলে জানিয়েছেন দলটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন। শনিবার দুপুরে বাংলামোটরে
দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।
আখতার বলেন, ‘বিদ্যমান কাঠামোয় নির্বাচন হলে ফ্যাসিবাদ ফিরে আসার শঙ্কা রয়েছে। পরবর্তী সংসদের হাতে সনদ বাস্তবায়ন ছেড়ে দিলে তা বাস্তবায়ন নিয়েও সংশয় থাকবে। জুলাই সনদের ভিত্তিতে সংস্কার ছাড়া নির্বাচনের দিকে অগ্রসর হলে দেশে গণতন্ত্র সুগঠিত হবে না।’
এনসিপির সদস্য সচিব আরও বলেন, ‘আইনি ভিত্তি দেওয়া ও বাস্তবায়ন না হলে জুলাই সনদ মানুষের মুক্তির আকাঙ্ক্ষা পূরণে ব্যর্থ হবে। জুলাই সনদকে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন সংবিধানের প্রস্তাবনা যদি কমিশন না আনে, তাহলে এটি ব্যর্থ হবে।’
গত ১৬ আগস্ট জাতীয় ঐকমত্য কমিশন জুলাই সনদের খসড়া রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে মতামতের জন্য পাঠায়। শুক্রবার শেষ হয় মতামত দেওয়ার সময়সীমা। মোট ১৬টি রাজনৈতিক দল কমিশনের কাছে তাদের মতামত দিয়েছে।
এরপর সনদ চূড়ান্তকরণ ও বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আবারও বৈঠক করার কথা রয়েছে ঐকমত্য কমিশনের। কমিশন আগস্টের মধ্যেই সনদ চূড়ান্ত করতে চায়।
বিএনপি জুলাই সনদকে সংবিধানের ওপরে রাখার বিপক্ষে। দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ সম্প্রতি বলেছেন, জুলাই সনদকে সংবিধানের ওপরে রাখা হলে তা ভবিষ্যতের জন্য খারাপ নজির হবে।
সালাহউদ্দিন বলেন, ‘কোনো ডকুমেন্ট বা সমঝোতা দলিল কি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হতে পারে? বা অতিরিক্ত সাংবিধানিক দলিল হতে পারে? আমাদের ভাবতে হবে কীভাবে সংবিধানের ভেতর থেকে আইনি ও সাংবিধানিক প্রক্রিয়ায় এই সমঝোতা দলিলকে গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা যায়।’
জুলাই সনদের ৪ নম্বর অঙ্গীকারে উল্লেখ আছে—সনদের সব বিধানের বৈধতা নিয়ে আদালতে প্রশ্ন তোলা যাবে না। এতে জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার ক্ষুণ্ণ হবে বলে মনে করেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক। সম্প্রতি তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোর কোনো আলোচনা বা সমঝোতা নিশ্চয়ই সংবিধানের ওপরে স্থান পেতে পারে না। দ্বিতীয়ত, একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নে আপত্তি আছে—তারা বলেছেন, সনদে যে বিষয়গুলো গ্রহণ করা হচ্ছে তা নিয়ে নাগরিকরা কোনো আইনের আশ্রয় নিতে পারবেন না। এটি অগ্রহণযোগ্য।’
এনসিপি বরাবরই বলে আসছে, নির্বাচনের আগে অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনেই এই সনদ বাস্তবায়ন করতে হবে।