ঢাকা | বঙ্গাব্দ

লোহাগড়া পৌরসভার প্রশাসকসহ অন্যান্য কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে প্রকাশিত সংবাদ ভিত্তিহীন দাবি

  • নিউজ প্রকাশের তারিখ : Sep 22, 2025 ইং
  • শেয়ার করুনঃ
ad728

লোহাগড়া (নড়াইল) প্রতিনিধি:

নড়াইলের লোহাগড়া পৌরসভার প্রশাসক মিঠুন মৈত্রসহ পাঁচজন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনে গত ২১ সেপ্টেম্বর যশোর থেকে প্রকাশিত দৈনিক গ্রামের কাগজে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। তবে পৌরসভার প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা সংবাদটিকে ‘মিথ্যা, বানোয়াট ও উদ্দেশ্যমূলক’ বলে দাবি করেছে।

সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে লোহাগড়া পৌরসভা কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে প্রশাসক মিঠুন মৈত্রসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেন, 'আমাদের বিরুদ্ধে প্রকাশিত প্রতিটি অভিযোগ ভুয়া ও কাল্পনিক। গ্রামের কাগজের প্রতিনিধি বারবার আমাদের কাছে অনৈতিক সহযোগিতা চাইতেন। আমরা তা প্রত্যাখ্যান করায় তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে বিভ্রান্তিকর, মনগড়া সংবাদ প্রকাশ করেছেন। আমরা প্রকাশিত সংবাদের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। 

পৌরসভার হিসাবরক্ষক কর্মকর্তা উজ্জ্বল সরকার বলেন, 'পৌরসভার সব আয়-ব্যয়ের হিসাব প্রতিবছর অডিটের মাধ্যমে যাচাই হয়। যদি কোনো অনিয়ম থাকত, তা অডিটেই ধরা পড়ত। কিন্তু উদ্দেশ্যমূলকভাবে আমাদের মানহানি করার জন্য বিভ্রান্তিকর সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে।

পৌর কর্মকর্তাদের পাশাপাশি স্থানীয় অনেকেই ওই পত্রিকার সাংবাদিক কে অতীত কর্মকাণ্ড নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। স্থানীয়দের দাবি, প্রায় ১৭ বছর আগে তিনি স্বেচ্ছায় বিডিআর চাকরি ছাড়েন। পরবর্তীতে লোহাগড়া উপজেলায় ‘র‍্যাক’ নামে একটি এনজিও প্রতিষ্ঠা করে গ্রাহকদের কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন এবং পরে উধাও হয়ে যান। ক্ষতিগ্রস্তদের অনেকেই এখনও টাকা ফেরত পেতে দৌড়ঝাঁপ করছেন। অভিযোগ রয়েছে, এ ঘটনায় কয়েকজন গ্রাহক আর্থিক ক্ষতির শিকার হয়ে মৃত্যুবরণও করেছেন।
এছাড়া গ্ৰামের কাগজের লোহাগড়া প্রতিনিধির বিরুদ্ধে প্রতারণা, ভয়ভীতি প্রদর্শন এবং সাংবাদিক পরিচয় ব্যবহার করে বিভিন্ন দপ্তরে প্রভাব খাটানোর ও অভিযোগও রয়েছে। তার নামে ১টি হত্যা মামলাও চলমান রয়েছে। উপজেলার গন্ডব গ্রামে ট্রিপল হত্যা মামলার আসামি হয়ে তিনি পূর্বে সাত মাস কারাভোগ করেছেন। বর্তমানে মামলাটি বিচারাধীন রয়েছে। 

স্থানীয় সূত্রে জানাযায় বহুল আলোচিত গ্ৰামের কাগজের লোহাগড়া উপজেলা প্রতিনিধি হয়ে তিনি 
প্রায় ১০ কোটি টাকার সম্পদের মালিক হয়েছেন। লোহাগড়া পৌর শহরে দোতলা বাড়ি, উপজেলার একাধিক স্হানে জমি ও ঢাকায় ফ্ল্যাট মালিকানাসহ বিলাসবহুল জীবনযাপন করছেন তিনি।

তার রাজনৈতিক পরিচয় নিয়েও ধোঁয়াশা রয়েছে। বিগত ১৬ বছর ধরে তিনি আওয়ামী লীগ বিরোধী অবস্থানে থাকলেও আওয়ামী লীগের কতিপয় নেতার কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা নিয়েছেন। ৫ আগষ্টের পর তিনি ভোল পাল্টে নতুন রাজনৈতিক দল এনসিপিতে ঢুকে পড়েছেন। 
সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা দেখিয়ে পরিচয় ব্যবহার করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
পৌর কর্তৃপক্ষ অভিযোগ করে বলেছেন, সংবাদে পৌরসভার রাজস্ব আদায়ের তথ্য বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। 

তিনি আরো লিখেছেন, নাগরিক সনদ থেকে আদায়: প্রায় ৫.৭ লাখ টাকা, উত্তরাধিকার সনদ থেকে আদায়: ২.১৫ লাখ টাকা, ট্রেড লাইসেন্স থেকে আদায়: প্রায় ৪৪ লাখ টাকা, হাট-বাজার ইজারা থেকে প্রাপ্ত: প্রায় ৮৬ লাখ টাকা, দলিল রেজিস্ট্রি থেকে আদায়: ১ কোটি ২১ লাখ টাকা, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে আদায়: প্রায় ৪৭ লাখ টাকা, ইমারত নকশা অনুমোদন থেকে গড়ে: প্রায় ২০ লাখ টাকা, কর্তৃপক্ষের দাবি, “এসব প্রকল্প বা অর্থ নিয়ে সংবাদে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও কাল্পনিক।”

এ বিষয়ে গ্ৰামের কাগজের লোহাগড়া উপজেলা প্রতিনিধি বলেন,আমি সম্পূর্ণ তথ্যের উপর ভিত্তি করে নিউজটি করেছি বাকিটা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তদন্ত করে দেখবেন। 

পৌর প্রশাসক মিঠুন মৈত্রসহ কর্মকর্তারা বলেন, “মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করে আমাদের মানহানি করা হয়েছে। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই। প্রশাসনের কাছে দাবি জানাই, ওই কাগজের প্রতিনিধির বিরুদ্ধে তদন্তসাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হোক।”
তাদের মতে, এ ধরনের উদ্দেশ্যমূলক সংবাদ শুধু পৌরসভার ভাবমূর্তি নষ্ট করছে না, বরং সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অযথা বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্যে ফেলছে।

নিউজটি আপডেট করেছেন : জার্নাল ডেস্ক

কমেন্ট বক্স